24 September 2023

সোনামনিদের ‘ই-য়’ ও ‘এ-ত্র’ বিধান

সোনামনিদের ‘ই-য়’ ও ‘এ-ত্র’ বিধান

দেশে শিক্ষার হার বেড়েছে, সমানতালে বেড়েছে ইন্টারনেটের ব্যবহার। দেশের আনাচে কানাচে সবজায়গায় ছড়িয়ে গেছে গুগল-ফেসবুক-ইউটিউব। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলা ব্যবহারের হারও বেড়েছে। বাংলায় সার্চ হচ্ছে, পোস্ট করা হচ্ছে, পোস্টের নিচে কমেন্ট করা হচ্ছে, মিম বানানো হচ্ছে, সেগুলো দেদারছে শেয়ার হচ্ছে।

তবে ইদানীং দেখা যাচ্ছে, তাড়াহুড়ায় কিংবা অসাবধানতাবশত বেশকিছু শব্দের বানান আমাদের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে। আর এই ভুলগুলো এমনভাবেই যাচ্ছে যে বাক্যের অর্থ পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন আমরা আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারে প্রয়োজন এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে জানবো।

ই ও য় এর ব্যবহার

বাংলা ক্রিয়াপদ পরিবর্তনের কাজে ই ও য় ব্যবহৃত হয়। আর এই বিষয়টি নির্ভর করে পুরুষ (পার্সন) এর ওপর।

বাক্য প্রথম পুরুষে (ফার্স্ট পার্সন) বলা হলে ক্রিয়াপদ ‘ই’ যুক্ত হয়ে শেষ হবে। যেমন- আমি খাই, আমরা যাই। বাক্য দ্বিতীয় পুরুষে (সেকেন্ড পার্সন) বলা হলে ‘ও’ যুক্ত হয়ে ক্রিয়াপদ শেষ হবে। যেমন- তুমি যাও, তোমরা চাও। আর বাক্য তৃতীয় পুরুষে (থার্ড পার্সন) বলা হলে সেখানে ক্রিয়াপদের শেষে ‘য়’ যুক্ত হবে। যেমন- সে চায়, তারা খায়। নিচের চার্টে বিষয়টি আরও সহজ করে দেয়া হলো-

প্রথম পুরুষ (ফার্স্ট পার্সন)

আমরা ভাত খাই, খাওয়ার পর বাইরে যাই, যাওয়ার সময় ওদের দিকে তাকাই।

দ্বিতীয় পুরুষ (সেকেন্ড পার্সন)

তোমরা রুটি খাও, খাওয়ার পর বাইরে যাও, যাওয়ার সময় আমাদের দিকে তাকাও।

তৃতীয় পুরুষ (থার্ড পার্সন)

রাহুল পিজ্জা খায়, খাওয়ার পর বাইরে যায়, যাওয়ার সময় তাদের দিকে তাকায়।

 

এ ও ত্র এর ব্যবহার

এ ও ত্র এর ব্যবহারে ভুল করতে না চাইলে প্রথমেই এই দু’টি চিহ্নের দিকে একটু ভালো করে খেয়াল করতে হবে। এই দু’টি চিহ্ন দেখতে খুব কাছাকাছি হলেও একটু মনোযোগ দিলে দেখা যাবে, এখানে একটি মাত্রার পার্থক্য আছে। এখানে ‘এ’ এর ওপর মাত্রা নেই; আর ‘ত্র’ এর ওপর মাত্রা আছে। কাছাকাছি দেখতে হলেও এদের ব্যবহারে যোজন যোজন ফারাক রয়েছে।

‘এ’ একটি বাংলা মৌলিক স্বরধ্বনি ও স্বরবর্ণ। ভাষায় এই স্বরবর্ণটি বহুলব্যবহৃত। যেমন- এখানে, এসব, এত, এখন, এসে এই ইত্যাদি। অন্যদিকে ‘ত্র’ চিহ্নটি দু’টি বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ ‘ত’ ও ‘র’ একত্রে যুক্ত হয়ে তৈরি হয়। যেমন- ছাত্র, পাত্র, মাত্র, যাত্রা, সূত্র, ত্রাণ, ত্রিভুজ ইত্যাদি। আরও সহজভাবে বোঝার জন্য নিচে একটি চার্ট দেয়া হলো-

 

ঠিক

ভুল

এখন এখানে এসে এসব ভালো লাগছে না

ত্রখন ত্রখানে ত্রসে ত্রসব ভালো লাগছে না

ত্র

ছাত্ররা মাত্রই ত্রাণ দিতে যাত্রা করলো

ছাএরা মাএই এাণ দিতে যাএা করলো

সময়ের সাথে সাথে ইন্টারনেটে বাংলার ব্যবহার আরও বাড়বে। এসময় এই দু’টি ভুল এড়িয়ে চলতে পারলে বাংলা লেখতে, দেখতে ও পড়তে সুবিধাজনক হবে।