অংশ ১
১. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে সর্বোচ্চ সুখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে একজন বিশ্বাষী সামনে এগিয়ে যায়। হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, সে তার সাথে রাখে পবিত্র কাঠ, সে তার সাথে রাখে বারেশ্মা, সে তার সাথে রাখে পবিত্র মাংস, সে তার সাথে রাখে পবিত্র হামানদিস্তা। সে ভালোবাসার সাথে মান্য করে বিধান, এবং এমনভাবে প্রার্থনা করে, যা দুর থেকেও শোনা যায়; মিথ্রার নিকটে, যিনি মহান মেষপালকদের প্রভু এবং রামা হ্বস্ত্রার নিকটে।
২. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সুখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে একজন বিশ্বাষী প্রতিষ্ঠা করে তার ঘর, যেখানে পুরোহিতদের প্রবেশাধিকার থাকে। যেখানে অবস্থান করে তার গবাদিপশু, তার স্ত্রী, তার সন্তানেরা এবং তার গবাদিপশুর পাল।
৩. এবং তারপর সেখানে তার গবাদিপশু সমৃদ্ধি লাভ করে, পবিত্রতা সমৃদ্ধি লাভ করে, গবাদিপশুর খাদ্য সমৃদ্ধি লাভ করে, কুকুর সমৃদ্ধি লাভ করে, স্ত্রী সমৃদ্ধি লাভ করে, সন্তানেরা সমৃদ্ধি লাভ করে, আগুন সমৃদ্ধি লাভ করে এবং জীবনের প্রত্যেকটি অনুগ্রহ সমৃদ্ধি লাভ করে।
৪. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে তৃতীয় সর্বোচ্চ সুখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে একজন বিশ্বাষী চাষাবাদ করে শষ্য, ঘাস এবং ফলাদি। হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, আমি শুষ্ক জমিকে করি আর্দ্র এবং আর্দ্র জমিকে করি শুষ্ক।
৫. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে চতুর্থ সর্বোচ্চ সুখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে, পশু এবং পাখিদের দল-পাল এবং ঝাঁক।
৬. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে পঞ্চম সর্বোচ্চ সুখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে পশু এবং পাখিদের দল-পাল এবং ঝাঁকেরা, নিষ্কাশন করে তাদের বর্জ্য।
অংশ ২
৭. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে সর্বোচ্চ যন্ত্রনাপূর্ণ দুঃখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- আরেজুরার ঘাড় হচ্ছে সে স্থান, যে নরকের গর্ত থেকে অগণিত শয়তান বেপরোয়া ভাবে অগ্রধাবন করে।
৮. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ যন্ত্রনাপূর্ণ দুঃখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে কুকুরের এবং মানুষের মৃতদেহকে সমাহিত করা হয়।
৯. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে তৃতীয় সর্বোচ্চ যন্ত্রনাপূর্ণ দুঃখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে বেশিরভাগ দাখমা দাড়িয়ে থাকে, যেখানে মানুষের মৃতদেহ জমিয়ে রাখা হয়।
১০. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে চতুর্থ সর্বোচ্চ যন্ত্রনাপূর্ণ দুঃখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে গর্তে বসবাস করে আহরি মানের বেশিরভাগ সৃষ্টি।
১১. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে পঞ্চম সর্বোচ্চ যন্ত্রনাপূর্ণ দুঃখের স্থান কোথায়? আহুর মাজদা বললেন- সে স্থানে, যেখানে শত্রুর হাতে বিশ্বাষীরা নিহত হয়। এবং তাদের স্ত্রী-সন্তানদের পশুর পালের মতো আঘাত করে করে তাড়িয়ে নেয়া হয়। হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, তাদের বন্দী করা হয়, শুষ্ক এবং ধূলিমলিন পথে তারা চিৎকার করে বিলাপ করে ওঠে।
অংশ ৩
১২. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে সর্বোচ্চ আনন্দে আনন্দিত কে? আহুর মাজদা বললেন- সে ব্যক্তি, যে মাটি খুঁড়ে বের করে, কুকুর এবং মানুষের মৃতদেহ।
১৩. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আনন্দে আনন্দিত কে? আহুর মাজদা বললেন- সে ব্যক্তি, যে ধ্বংস করে বেশিরভাগ দাখমা, যেখানে মানুষের মৃতদেহ জমিয়ে রাখা হয়।
১৪. একলা কাউকে একটি মৃতদেহ বহন করার অনুমতি দেয়া হয়নি। যদি কেউ একলা একটি মৃতদেহ বহন করে, তবে নাসু, তাকে দূষিত করতে, বেপরোয়া ভাবে অগ্রধাবন করে; মৃতের নাক থেকে, চোখ থেকে, জিহ্বা থেকে, চোয়াল থেকে, যৌনাঙ্গ থেকে এবং অন্যান্য প্রত্যঙ্গ থেকে। এই নরক, এই নাসু, তার উপর পতিত হয়, তাকে বিবর্ণ করতে, এমনকি শেষ নখটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত। এবং সে অপবিত্র থাকে সেই সময় থেকে শুরু করে, সবসময়ের এবং সবসময়ের জন্য।
১৫. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; যে কেউ একলা একটি মৃতদেহ বহন করলো, তার স্থান কোথায় হবে? আহুর মাজদা বললেন- তার স্থান হবে এই পৃথিবীতে, যেখানে থাকবে সামান্য জল এবং সামান্যতম গাছপালা। যেখানে ভূমি হবে পরিষ্কার এবং শুষ্ক; এবং সেখানে খুব কম যাবে পশু এবং পাখিদের দল, পাল এবং ঝাঁক। এবং কম যাবে আহুর মাজদার সন্তান- আগুন, কম যাবে উৎসর্গীকৃত বারেশ্মাগুচ্ছ এবং কম যাবে বিশ্বাষীরা।
১৬. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; আগুন থেকে কতো দূরে? জল থেকে কতো দূরে? উৎসর্গীকৃত বারেশ্মাগুচ্ছ থেকে কতো দূরে? বিশ্বাষীদের কাছ থেকে কতো দূরে?
১৭. আহুর মাজদা বললেন- আগুন থেকে ত্রিশ পদক্ষেপ দূরে, জল থেকে ত্রিশ পদক্ষেপ দূরে, উৎসর্গীকৃত বারেশ্মাগুচ্ছ থেকে ত্রিশ পদক্ষেপ দূরে, বিশ্বাষীদের কাছ থেকে তিন পদক্ষেপ দূরে।
১৮. সে স্থানে, মাজদার পূজারীরা অপবিত্রদের জন্য নির্মান করবে, আর্মেশ্ত-গাহ। এবং সেখানে তাদেরকে রাখা হবে, খাবার সহ; সেখানে তাদেরকে রাখা হবে, কাপড় সহ। তাদের খাবার হবে অতি সাধারন এবং কাপড় হবে ব্যবহারের ফলে ক্ষয়প্রাপ্ত।
১৯. ঔ খাবার তাদের দেয়া হবে, যেনো তারা বেঁচে থাকে এবং ঔ কাপড় তাদের দেয়া হবে, যেনো তারা বেঁচে থাকে। যেনো তারা বেঁচে থাকে পঞ্চাশ, ষাট বা সত্তর বৎসর পর্যন্ত।
২০. এবং যখন তার বয়স হবে পঞ্চাশ, ষাট বা সত্তর বৎসর, তখন আহুর মাজদার পূজারীরা একজন শক্তিশালী, তেজস্বী এবং দক্ষ লোককে আদেশ দিবেন, যেনো তার শরীর থেকে চামড়া ছাড়ানো হয় এবং তার ধর থেকে মস্তক আলাদা করা হয়।
২১. এবং পর্বতের শীর্ষদেশ থেকে, তারা তার মৃতদেহ প্রদান করবে, আহুর মাজদার সৃষ্টি, শবখোর প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে লোভী, লোভী দাঁড়কাককে। এবং বলতে থাকবে এই বাক্য- ‘এই ব্যক্তি এখানে অনুতপ্ত। তার সমস্ত অসৎ চিন্তা, বাক্য এবং চুক্তির জন্য। যদি তার আর কোনো অসৎ চিন্তা থেকে থাকে, তাহলে তাকে তার অনুশোচনার জন্য ক্ষমা করা হোক। যদি তার আর কোনো অসৎ চিন্তা না থেকে থাকে, তাহলে তাকে তার পাপ থেকে মুক্তি দেয়া হোক। সবসময়ের এবং সবসময়ের জন্য।’
২২. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবী তৃতীয় সর্বোচ্চ আনন্দে আনন্দিত কে? আহুর মাজদা বললেন- সে ব্যক্তি, যে অতিক্রম করতে পারে, আহরি মানের সৃষ্ট ফাঁদ।
২৩. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে চতুর্থ সর্বোচ্চ আনন্দে আনন্দিত কে? আহুর মাজদা বললেন- সে ব্যক্তি, যে চাষ করে শষ্য, ঘাস এবং ফল। হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, আমি শুষ্ক ভূমিকে করি জলে সিক্ত এবং সিক্ত ভূমিকে করি শুষ্ক।
২৪. ভূমি অসুখী থাকে, যখন সে পতিত থাকে, বপনকারীর অভাবে। এবং সে আশা করে একজন কৃষক। একজন যৌবনবতী সন্তানহীন তরুণীর মতো, যেমন সে আশা করে স্বামী।
২৫. যে ব্যক্তি, পৃথিবীকে চাষ করে, হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, তার ডান ও বাম বাহু দ্বারা, তার বাম ও ডান বাহু দ্বারা; সে এমনভাবে তাকে চাষযোগ্য করে তোলে, যেমন তার বিছানায় অবস্থান করছে তার প্রিয়তমা। এবং প্রিয়তমা যেমন সন্তান প্রদানের জন্য উৎসুক হয়ে থাকে, তেমনি সেও দিতে চায় ফলফলাদি।
২৬. যে ব্যক্তি, পৃথিবীকে চাষ করে, হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, তার ডান ও বাম বাহু দ্বারা, তার বাম ও ডান বাহু দ্বারা;
২৭. তার প্রতি পৃথিবী বলে- হে মানুষ, যে আমাকে চাষ করে, ডান ও বাম বাহু দ্বারা, বাম ও ডান বাহু দ্বারা, যে আমার কাছে আসে এবং রুটি চেয়ে নেয়, আমি তার দ্বায়িত্ব নিই এবং তাকে সবসময় খাবার যোগান দেই এবং তাতে আমার শষ্যের প্রাচুর্য প্রকাশিত হয়।
২৮. যে ব্যক্তি, পৃথিবীকে চাষ করে না, হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, তার ডান ও বাম বাহু দ্বারা, তার বাম ও ডান বাহু দ্বারা;
২৯. তার প্রতি পৃথিবী বলে- হে মানুষ, যে আমাকে চাষ করে না, ডান ও বাম বাহু দ্বারা, বাম ও ডান বাহু দ্বারা, যে আমার কাছে আসে আগন্তুকের মতো এবং রুটি চেয়ে নিতে চায়, আমি তাকে ফেরত পাঠাতে দ্বিধাগ্রস্থ হই না। এবং তাকে ফেরত পাঠাই, সম্পদের প্রাচুর্য আছে এমন কারো কাছে।
৩০. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; খাবারের ব্যাপারে আহুর মাজদার আইন কোনটি? আহুর মাজদা বললেন- সেটি হচ্ছে, জমিতে শষ্যের বীজ বপন করা, বারবার এবং বারবার, হে স্পিতামা জরথুস্ত্র।
৩১. সে, যে বপন করে শষ্য, বপন করে পবিত্রতা। সে আহুর মাজদার আইনকে উচ্চতাসহ বৃদ্ধি করে। সে আহুর মাজদার আইনকে শক্তিশালী করে, যেমন শক্তিশালী হয়, শত আরাধনায়, সহস্র নৈবেদ্যে এবং অযুত উৎসর্গে।
৩২. যখন শষ্য বপন করা হয়, অশুভ শক্তিরা সতর্ক হয়। যখন শষ্যেরা গজিয়ে ওঠে, অশুভ শক্তিদের হৃদয় দুর্বল হতে থাকে। যখন শষ্যেরা পূর্ণাঙ্গ হয়, অশুভ শক্তিরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তারা সে বাড়িতে অবস্থান করেনা, তারা বিতাড়িত হয়, যে বাড়িতে শষ্যের গোলা থাকে। এটি যেনো লাল গরম লোহা, তাদের গলায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়, যেখানে শষ্যের চাষাবাদ হয়।
৩৩. তখন পূজারীরা লোকেদের বলবে, এই পবিত্র বাক্য- ‘খাদ্যগ্রহন করা ছাড়া, কেউ শক্তি পায় না; পবিত্রতার কাজের জন্য, চাষাবাদের জন্য এবং সন্তান গ্রহনের জন্য। খাদ্যগ্রহনের পর, প্রত্যেক বস্তুগত সৃষ্টি বেঁচে থাকে, খাদ্যগ্রহন না করলে তারা মৃত্যুবরন করে।’
৩৪. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; পৃথিবীতে পঞ্চম সর্বোচ্চ আনন্দে আনন্দিত কে? আহুর মাজদা বললেন- সে ব্যক্তি, যে চাষ করে পৃথিবী। হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, এবং সেখান থেকে সে দান করে বিশ্বাষীদের, দয়া সহ এবং সততা সহ।
৩৫. যে চাষ করে পৃথিবী, হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, এবং সেখান থেকে সে দান করে না বিশ্বাষীদের, দয়া সহ এবং সততা সহ; নিশ্চয় পতিত হবে, পৃথিবীর গভীরে অন্ধকারে। পতিত হবে গভীর দুঃখ এবং শোকের জগতে, যেটি চিরবিষন্ন এলাকা। এবং নিশ্চয় সে পতিত হবে, তার নরকের বাড়িতে।
অংশ ৪
৩৬. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; যদি কোনো ব্যক্তি, মাটিতে সমাহিত করে, কুকুরের মৃতদেহ অথবা মানুষের মৃতদেহ, এবং সে যদি তা অর্ধ-বৎসরের মধ্যে মাটি থেকে না তোলে, তার জন্য কি শাস্তি নির্ধারিত? আহুর মাজদা বললেন- আস্পাহে-অস্ত্রের মাধ্যমে পাঁচশত চাবুকের বাড়ি এবং স্রাওশা-করনের মাধ্যমে পাঁচশত চাবুকের বাড়ি।
৩৭. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; যদি কোনো ব্যক্তি, মাটিতে সমাহিত করে, কুকুরের মৃতদেহ অথবা মানুষের মৃতদেহ, এবং সে যদি তা এক বৎসরের মধ্যে মাটি থেকে না তোলে, তার জন্য কি শাস্তি নির্ধারিত? আহুর মাজদা বললেন- আস্পাহে-অস্ত্রের মাধ্যমে এক হাজার চাবুকের বাড়ি এবং স্রাওশা-করনের মাধ্যমে এক হাজার চাবুকের বাড়ি।
৩৮. হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; যদি কোনো ব্যক্তি, মাটিতে সমাহিত করে, কুকুরের মৃতদেহ অথবা মানুষের মৃতদেহ, এবং সে যদি তা দুই বৎসরের মধ্যে মাটি থেকে না তোলে, তার জন্য কি শাস্তি নির্ধারিত? তার জন্য কি প্রায়শ্চিত্ত নির্ধারিত? এটা থেকে বিশোধিত হওয়ার প্রক্রিয়া কি?
৩৯. আহুর মাজদা বললেন- তার জন্য এমন কিছু নেই, যাতে তা পূরন হতে পারে। তার জন্য কোনো প্রায়শ্চিত্ত নেই। এটা থেকে বিশোধিত হওয়ার কোনো প্রক্রিয়াও নেই। এটা এমন একটি পাপ, যার কোনো প্রায়শ্চিত্ত নেই, সবসময়ের জন্য এবং সবসময়ের জন্য।
৪০. কখন এরকমটা হবে? -এরকম হবে তখন, যখন পাপী, আহুর মাজদার আইনের কোনো শিক্ষক, অথবা তা শিক্ষা পেয়েছে, এমন কেউ এরকমটা করবে। কিন্তু যদি সে আহুর মাজদার আইনের শিক্ষক না হয় অথবা এমন কেউ, যে সেই শিক্ষা পায় নি, আহুর মাজদার আইন তার কাছ থেকে সেই পাপ নিয়ে নিবে। যদি সে পাপ স্বীকার করে, পাপ না করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং পাপ থেকে নিজেকে নিষিদ্ধ মনে করে।
৪১. বস্তুত, হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, আহুর মাজদার আইন হচ্ছে, যে তার ঘটে যাওয়া সমস্ত পাপ স্বীকার করে; তাকে তার পাপ থেকে সরিয়ে নেয়া, তার পাপ লাঘব করা। তার বিশ্বাষভঙ্গের পাপ লাঘব করা হয়, তার বিশ্বাষীদের হত্যা করার পাপ লাঘব করা হয়, তার মৃতদেহ সমাহিত করার পাপ লাঘব করা হয়। লাঘব করা হয় এমন সব পাপ, যার কোনো প্রায়শ্চিত্ত নেই। লাঘব করা হয় সব সর্বোচ্চ শাস্তির পাপ। লাঘব করা হয় এমন সব পাপ, যা পাপ হতে পারতো।
৪২. হে স্পিতামা জরথুস্ত্র, একই সাথে আহুর মাজদার আইন বিশ্বাষীদের বিশোধন করে, সমস্ত অসৎ চিন্তা, বাক্য এবং চুক্তি থেকে। যেমন করে দ্রুতগামী পরাক্রমশালী বাতাস বিশোধন করে থাকে সমতলভূমি। সুতরাং সমস্ত চুক্তি হোক. ভবিষ্যৎ মঙ্গলের জন্য এবং আহুর মাজদার আইনে যা পাপ, হে জরথুস্ত্র, তা থেকে পূর্ণ প্রায়শ্চিত্তের জন্য।
[পাদটীকা সংযুক্তি
পদ ১... বারেশ্মা... ডালিম, খেজুর বা তেঁতুল গাছের পাতাসহ কচি ডালের গুচ্ছ।
পদ ১... রামা হ্বস্ত্রা... গবাদীপশুদের উত্তম পালক প্রদানকারী দেবতা।
পদ ৭... আরেজুরার ঘাড়... নরকের প্রবেশপথের পাহাড়ের উপত্যকা। আহরি মানের সমস্ত মন্দসৃষ্টির জন্মস্থান।
পদ ৯... দাখমা... মৌনস্তম্ভ। পারসিক ধর্মমতে যেখানে মানুষের মৃতদেহ অন্যান্য মাংসাশী জীবদের জন্য জমিয়ে রাখা হয়।
পদ ১৪... নাসু... মৃতদেহকে দূষিত করার দ্বায়িত্বে নিয়োজিত অশুভ দেবতা।
পদ ৩৬... আস্পাহে-অস্ত্র... ঘোড়ার লেজ থেকে প্রস্তুত চাবুক।
পদ ৩৬... স্রাওশা-করন... তিনটি আস্পাহে-অস্ত্রের সমন্বয়ে প্রস্তুত চাবুক।
পদ ৪২... বিশ্বাষী... অর্থাৎ পারসিক ধর্মে বিশ্বাষী, আহুর মাজদার আইনে বিশ্বাষী, জরথুস্ত্রের আইনে বিশ্বাষী।]
No comments:
Post a Comment