ফারগার্দ ৫
অংশ ১ক
১। উপত্যকার গভীরে একজন মানুষ
মৃত্যুবরণ করলো। একটি পাখি পর্বতের চূড়া থেকে উড়ে গিয়ে উপত্যকার গভীরে নিচে নেমে গেলো। এবং
সেখানে সে মৃতব্যক্তির শব খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলো। তারপর সে উড়ে চলে এলো উপত্যকার
গভীর থেকে পর্বতের চূড়াতে। সে সেখানে গাছ থেকে গাছে
ঘুরে বেড়াবে, শক্ত কাঠের গাছ থেকে নরম কাঠের গাছে। এবং সে সেই গাছগুলোর উপর বমি
করবে, উৎপন্ন করবে বর্জ্য। যেখানে থাকবে মৃতব্যক্তির শরীরের অংশ।
২। এখন, এখানে একজন মানুষ আসলো,
উপত্যকার গভীর থেকে পর্বতের চূড়াতে। সে সেইসব গাছগুলোর কাছে আসলো, যেখানে পাখি
বসেছিলো। সেই গাছ থেকে মানুষ কাঠ সংগ্রহ করে আগুন জ্বালানোর জন্য। মানুষ সেই গাছ
ফেলে, সেই গাছ কাটে, সেই গাছকে কাঠের গুঁড়িতে ভাগ করে এবং তারপর সে সেখান থেকে
জ্বালে আগুন; আগুন, আহুর মাজদার সন্তান। তার জন্য কি শাস্তি নির্ধারিত?
৩। আহুর মাজদা বললেন- সেখানে
কোনো পাপ নেই, সেই ব্যক্তির জন্য যে মৃত, যে গৃহীত হবে কুকুরের দ্বারা, পাখির
দ্বারা, নেকড়ের দ্বারা, বাতাসের দ্বারা বা মাছির দ্বারা।
৪। সেইজন্য সেখানে পাপ হবে,
সেইসব ব্যক্তির যারা এই মৃতব্যক্তির জন্য অপরাধী; সেই মৃতব্যক্তি যে গৃহীত হয়েছে
কুকুরের দ্বারা, পাখির দ্বারা, নেকড়ের দ্বারা, বাতাসের দ্বারা বা মাছির দ্বারা। কতো শীঘ্র, আমার সৃষ্টিজগত পূর্ণ হয়ে
যাচ্ছে, এইসব মৃতব্যক্তির অপরাধে অপরাধীর দ্বারা; যারা পবিত্রতার বাইরে, যাদের
আত্মা কাঁদবে এবং বিলাপ করবে। কারন, অগণিত সত্ত্বা মাটির উপরিভাগেই মৃত্যুবরণ করে।
অংশ ১খ
৫। হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে
পবিত্রজন; এখানে একজন ব্যক্তি শষ্যের জমিতে জল দিচ্ছে। জল তার জমিতে প্রবাহিত হলো,
আবারো প্রবাহিত হলো, তৃতীয়বার প্রবাহিত হলো, চতুর্থবারও প্রবাহিত হলো। এবং চতুর্থ
বারের সময়, একটি কুকুর বা একটি শেয়াল বা একটি নেকড়ে; একটি মৃতদেহ সাথে করে নিয়ে
এলো, সেই জলপ্রবাহিত জমির উপর। সেই ব্যক্তির জন্য কি শাস্তি নির্ধারিত?
৬। আহুর মাজদা বললেন- সেখানে
কোনো পাপ নেই, সেই ব্যক্তির জন্য যে মৃত, যে গৃহীত হবে কুকুরের দ্বারা, পাখির
দ্বারা, নেকড়ের দ্বারা, বাতাসের দ্বারা বা মাছির দ্বারা।
৭। সেইজন্য সেখানে পাপ হবে, সেইসব ব্যক্তির যারা এই
মৃতব্যক্তির জন্য অপরাধী; সেই মৃতব্যক্তি যে গৃহীত হয়েছে কুকুরের দ্বারা, পাখির দ্বারা, নেকড়ের দ্বারা, বাতাসের দ্বারা বা মাছির দ্বারা। কতো শীঘ্র, আমার সৃষ্টিজগত পূর্ণ হয়ে
যাচ্ছে, এইসব
মৃতব্যক্তির অপরাধে অপরাধীর দ্বারা; যারা পবিত্রতার বাইরে, যাদের আত্মা কাঁদবে এবং বিলাপ করবে। কারন, অগণিত সত্ত্বা মাটির উপরিভাগেই
মৃত্যুবরণ করে।
অংশ ২ক
৮। হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে
পবিত্রজন; জল হত্যা করে কি?
আহুর মাজদা বললেন- জল কোনো
ব্যক্তিকে হত্যা করে না। অস্ত-বিধৌত তার ঘাড়ে ফাঁস বাঁধে এবং বায়ু তাকে বহন করে।
তারপর তাকে বন্যা গ্রহণ করে, বন্যা তাকে নিচে নিয়ে যায়, বন্যা তাকে কূলে নিক্ষেপ
করে। সেখানে সে পাখিদের খাবার হয়, এবং নিয়তি তাকে নিয়ে যায় এখানে এবং নিয়ে যায়
সেখানে।
অংশ ২খ
৯। হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে
পবিত্রজন; আগুন হত্যা করে কি?
আহুর মাজদা বললেন- আগুন কোনো
ব্যক্তিকে হত্যা করে না। অস্ত-বিধৌত তার ঘাড়ে ফাঁস বাঁধে এবং বায়ু তাকে বহন করে।
আগুন তাকে পোড়ায়, তার জীবন এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, এবং তারপর নিয়তি তাকে নিয়ে যায়
এখানে এবং নিয়ে যায় সেখানে।
অংশ ৩
১০। হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা,
হে পবিত্রজন; যদি গ্রীষ্ম অতীত হয় এবং শীত আসে, আহুর মাজদার পূজারীরা তখন কি করবে?
আহুর মাহদা বললেন- প্রত্যেক
বাড়িতে এবং প্রত্যেক নগরে তারা তৈরী করবে, তিনটি করে মৃতদের জন্য ঘর।
১১। হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা,
হে পবিত্রজন; মৃতদের জন্য ঘরগুলো কতো বড় হবে?
আহুর মাজদা বললেন- যথেষ্ট পরিমান বড়, যেনো তা খুলিতে আঘাত না করে, বা পায়ে আঘাত না করে, বা একজন ব্যক্তির হাতে আঘাত না করে। যদি কোনো ব্যক্তি
সোজা হয়ে দাঁড়ায়, বা তার পা সোজা করে, বা তার হাত বিস্তৃত করে। আর এমনটাই হলো, মৃতদের জন্য ঘরের ব্যাপারে আইন।
১২। এবং তারা সেখানে
রাখবে প্রাণহীন মৃতদেহ, দুই রাতের জন্য, বা তিন রাতের জন্য, বা এক মাসের জন্য; যতক্ষণ না পর্যন্ত পাখিরা উড়তে শুরু করে, গুল্মেরা গজাতে শুরু করে, বন্যারা বইতে শুরু করে এবং বাতাস শুকনো হতে শুরু করে। যতক্ষণ না পর্যন্ত
শীত অতীত হয়।
১৩। এবং যখন পাখিরা
উড়তে শুরু করবে, গুল্মেরা গজাতে শুরু করবে, বন্যারা বইতে শুরু করবে এবং বাতাস
শুকনো হতে শুরু করবে; যখন শীত অতীত হবে, তখন মাজদার পূজারীরা, মৃতদেহ দাখমায় শুইয়ে
দিয়ে আসবে, যেনো তার চোখ সূর্যের দিকে থাকে।
১৪। যদি মাজদার পূজারীরা ব্যর্থ
হয়, এক বছরের মধ্যে, মৃতদেহ দাখমায় শুইয়ে দিতে, যেনো তার চোখ সূর্যের দিকে থাকে;
তবে তারা কোনো বিশ্বাসীকে হত্যার অপরাধে অপরাধীর মতো, একই অপরাধে অপরাধী বলে
সাব্যস্ত হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ না মৃতদেহ বৃষ্টিতে না ধোয়, যতক্ষণ না দাখমা
বৃষ্টিতে না ধোয়, যতক্ষণ না অপরিচ্ছন্ন বিষয়াদি বৃষ্টিতে না ধোয় এবং যতক্ষণ না
পাখি সে মৃতদেহ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
অংশ ৪
১৫। হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা,
হে পবিত্রজন; এটা কি সত্য যে তুমি, আহুর মাজদা, বাতাস এবং মেঘেদের সাথে পাঠাও
জলকে, ভৌরুকশা সমুদ্র থেকে?
১৬। তুমি, আহুর মাজদা, তাদের
তৈরী করো মৃতদেহের উপর প্রবাহিত হওয়ার জন্য? তুমি, আহুর মাজদা, তাদের তৈরী করো
দাখমার উপর প্রবাহিত হওয়ার জন্য? তুমি, আহুর মাজদা, তাদের তৈরী করো সমস্ত অপবিত্র
বিষয়াদির উপর প্রবাহিত হওয়ার জন্য? তুমি, আহুর মাজদা, তাদের তৈরী করো হাড়ের উপর
প্রবাহিত হওয়ার জন্য? এবং তুমি, আহুর মাজদা, তাদের ফিরিয়ে নাও, অদেখা কোথাও? তুমি,
আহুর মাজদা, তাদের ফিরিয়ে নাও, পূতিকা সাগরে?
১৭। আহুর মাজদা বললেন- এই ঘটনাটি এইরকমই, যেমনটি তুমি বললে, হে ন্যায়পরায়ণ জরথুস্ত্র। আমি, আহুর মাজদা, বাতাস এবং মেঘেদের সাথে পাঠিয়েছি
জলকে, ভৌরুকশা সমুদ্র থেকে।
১৮। আমি, আহুর
মাজদা, তাদের তৈরী করেছি মৃতদেহের উপর প্রবাহিত হওয়ার জন্য। আমি, আহুর
মাজদা, তাদের তৈরী করেছি দাখমার উপর প্রবাহিত হওয়ার জন্য। আমি, আহুর
মাজদা, তাদের তৈরী করেছি সমস্ত অপবিত্র বিষয়াদির উপর প্রবাহিত হওয়ার জন্য। আমি, আহুর
মাজদা, তাদের তৈরী করেছি হাড়ের উপর প্রবাহিত হওয়ার জন্য। তারপর, আমি, আহুর মাজদা, তাদের ফিরিয়ে নিয়েছি,
অদেখা কোথাও। আমি, আহুর মাজদা, তাদের ফিরিয়ে নিয়েছি, পূতিকা সাগরে।
১৯। সেখানে জলেরা অবস্থান
করে ফোটার জন্য। তারা পূতিকা সাগরের অভ্যন্তরে ফোটে। এবং যখন তারা পূত
হয়, পূতিকা সাগর থেকে
তারা চলে আসে ভৌরুকশা সমুদ্রে, হারভিস্পতোখম অভিমুখে। যেখানে জন্মায় প্রত্যেক প্রজাতির উদ্ভিদের, সমস্ত বীজ। তারা জন্মায় শতে, হাজারে, বা শত হাজারে।
২০। আমি, আহুর মাজদা, পৃথিবীতে বৃষ্টি দেই, যেনো জন্মায় উদ্ভিদ। যেনো বিশ্বাসীরা
সেখানে পায়, খাদ্য এবং উপকারী
গাভীরা সেখানে পায়, খাদ্য। যেনো খাদ্য গ্রহণ করে, বিশ্বাসীরা বেঁচে থাকে এবং খাদ্য গ্রহণ করে, উপকারী গাভীরা।
অংশ ৫
২১। এটি, সমস্ত বিষয়াদির চেয়ে সর্বোত্তম; এটি, সমস্ত বিষয়াদির চেয়ে সবচেয়ে আনন্দদায়ক; যেমনটা তুমি বলে থাকো, হে ন্যায়পরায়ণ জরথুস্ত্র।
পবিত্র আহুর মাজদা, পবিত্র জরথুস্ত্রের সাথে, আনন্দিত হন, এই বাক্যের দ্বারা-
‘পবিত্রতা মানুষের জন্য, তার পরবর্তী জীবনের জন্য, যা সর্বোৎকৃষ্ট উত্তম; যে পবিত্রতা অর্জন করা হয় মাজদার
আইনের মাধ্যমে; তার জন্য, যে তার নিজেকে বিশোধন করে সৎ চিন্তা, সৎ বাক্য এবং সৎ চুক্তির মাধ্যমে।’
২২। হে মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা, হে পবিত্রজন; এই আইন, অশুভশক্তি-ধ্বংসকারী জরথুস্ত্রের এই আইন; কোন কোন মহানত্ব, উত্তমত্ব এবং ন্যায্যতার কারনে আর
অন্য সব বাচন থেকে মহান, উত্তম এবং ন্যায্য?
২৩। আহুর মাজদা বললেন- যেমন ভৌরুকশা সমুদ্রের বন্যা, অন্যসব বন্যার চেয়ে উপরে; তেমনি এই আইন, অশুভশক্তি-ধ্বংসকারী জরথুস্ত্রের এই আইন, অন্য সব বাচন থেকে মহান, উত্তম এবং ন্যায্য।
২৪। যেমন কোনো বিশাল
স্রোত দ্রুত প্রবাহিত হয়, সরু কোনো ছোট নদীর চেয়ে; তেমনি এই আইন, অশুভশক্তি-ধ্বংসকারী জরথুস্ত্রের এই আইন, অন্য সব বাচন থেকে মহান, উত্তম এবং ন্যায্য।
যেমন কোনো সুউচ্চ বিশাল বৃক্ষ ছায়াদান
করে, তার নিচে থাকা গুল্মদের; সে ছায়াদানকারী সুউচ্চ বৃক্ষের মতো
এই আইন, অশুভশক্তি-ধ্বংসকারী জরথুস্ত্রের এই আইন, অন্য সব বাচন থেকে উচ্চতর মহান, উত্তম এবং ন্যায্য।
২৫। যেমন পৃথিবীর চেয়ে
স্বর্গ উচ্চে অবস্থিত, এবং চারপাশে ঘিরে থাকে; তেমনি এই আইন, অশুভশক্তি-ধ্বংসকারী মাজদার এই আইন, অন্য সব বাচন থেকে উচ্চে অবস্থিত।
২৬। অতঃপর, রাতু তার জন্য আবেদন করবে, স্রাওশা-ভারেজ তার জন্য ক্রন্দন করবে। যা সে চিন্তা করেছে, যা চিন্তা করা তার উচিত হয়নি; অথবা যা সে চিন্তা করেনি, যা চিন্তা করা তার উচিত ছিলো। যা সে বলছে, যা বলা তার উচিত হয় নি; অথবা যা সে বলেনি, যা বলা তার উচিত ছিলো। যা সে করেছে, যা করা তার উচিত হয়নি; অথবা যা সে করেনি, যা করা তার উচিত ছিলো। রাতু তার প্রাপ্য
শাস্তির এক-তৃতীয়াংশ ক্ষমা করার
ক্ষমতা রাখে। যদি তার আর কোনো অসৎ চিন্তা না থেকে থাকে, তাহলে তাকে অনুশোচনার জন্য ক্ষমা করা হোক। যদি তার আর কোনো
অসৎ চিন্তা না থেকে থাকে, তাহলে তাকে তার পাপ থেকে মুক্তি দেয়া হোক। সবসময়ের এবং সবসময়ের
জন্য।
[পাদটীকা সংযুক্তি
পদ ৮… অস্তবিধৌত… চতুর্থ অধ্যায়, পাদটীকা- পদ ৪৯ দ্রষ্টব্য।
পদ ১৩... দাখমা... তৃতীয়
অধ্যায়, পাদটীকা- পদ ৯ দ্রষ্টব্য।
পদ ১৫... ভৌরুকশা সমুদ্র... অর্থাৎ
মেঘেদের সমুদ্র। পারসিক ধর্মমতে, বৃষ্টি হয়ে জল পৃথিবীতে নেমে আসার আগে, এখানে জমা
হয়।
পদ ১৬... পূতিকা সাগর... অর্থাৎ
পবিত্র সাগর। পারসিক ধর্মমতে, জল প্রথমে অদেখা কোথাও চলে যায়। সেখান থেকে যায়
পূতিকা সাগরে। সেখানে জল পবিত্র হয়। তারপর জল যায় ভৌরুকশা সমুদ্রে।
পদ ১৯... হারভিস্পতোখম… অর্থাৎ সমস্ত বীজের গাছ।
‘...ভৌরুকশা সমুদ্রের মধ্যখানে, যে গাছে সমস্ত প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ জন্মায়। সেখানে
থাকে স্বর্গীয় পাখি- সিনাম্রু। ওই গাছে বসে সে। যখন সে গাছ থেকে উড়ে যায়, সেখানে
জন্মায় হাজার নতুন ডাল। আবার যখন সে গাছে অবতরণ করে, হাজার ডাল সেখান থেকে ভেঙে
যায়। হাজার ডালের বীজ যত্রতত্র ছড়িয়ে পরে। বৃষ্টির মাধ্যমে বৃষ্টি-দেবতা, তিস্ত্রা, সেগুলো
পৃথিবীতে নামিয়ে নিয়ে আসেন।’ (আবেস্তান ব্যাখ্যা গ্রন্থ- ‘বুনদাহিস’ থেকে)
পদ ২৬... রাতু... বর্তমানে বলা
হয়, দাস্তুর। অর্থাৎ পুরোহিত বিচারক। পারসিক ধর্মে যে পুরোহিত বিচারকের ভূমিকাও
পালন করেন তাকে রাতু বা দাস্তুর বলা হয়। একজন রাতু পারসিক সমাজের আধ্যাত্মিক
প্রধান। ‘...রাতু প্রাপ্য শাস্তির এক-তৃতীয়াংশ ক্ষমা করে দিলে, ঈশ্বর পুরোটাই
ক্ষমা করে দেন।’ (পহ্লবী ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘সাদ্দার’ থেকে)
পদ ২৬... স্রাওশা-ভারেজ...
শাস্তি প্রদানের দ্বায়িত্বে নিয়োজিত পুরোহিত।]
No comments:
Post a Comment