আচ্ছা, মহানবী কেমন মুসলমান চেয়েছিলেন? তার অনুসারীরা কেমন হোক তিনি চেয়েছিলেন? মহানবীকে ইদানীং স্বর্গীয় কোনো চরিত্রে বসানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ, এই চেষ্টা গত দেড় হাজার বছর ধরেই চলছে। সাম্প্রতিক ওয়াজগুলোতে তাকে অবতার বানানোর মাধ্যমে মানুষের সমাজ থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু আসলে কি মহানবীর চাওয়া এইরকম৷ ছিলো?
তিনি তার সময়ে চিন্তায় অগ্রসর একজন মানুষ ছিলেন। তিনি তার দেশ ও জাতি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। চিন্তিত ছিলেন বলেই কিভাবে জাতীয় একতা বাড়ানো যায়, কিভাবে মানুষের মঙ্গল হবে, কিভাবে মানুষ মুক্তির দিকে এগিয়ে যাবে এগুলা নিয়ে ভেবেছেন। তার সময় কি হাসিঠাট্টা করার লোকের অভাব ছিলো বলে আপনার ধারনা? যারা মহানবীর এই চিন্তা নিয়ে হাহুতাশ করেনি।
মহানবী তার সময়ে স্রোতের বিপরীতে চলা একজন মানুষ। পুরো সমাজ যখন একদিকে তিনি তখন আরেকদিকে একলা দাড়িয়ে বললেন-বংশপরম্পরায় রক্তপাত বন্ধ কর। কয়জন তার কথা শুনেছিলো? হাতে গোনা কয়েকজন। ৪০ জনকে সাথে নিয়ে তিনি প্রচারকার্যে বেরিয়েছেন যেখানে পদেপদে বাধা। যেখানে কেউ তার কথা শোনার জন্য প্রস্তুত না। টিটকারি করা, পাগল বলা, অসুস্থ বলা এমনকি গায়ে পর্যন্ত হাত তোলা হয়েছিলো। এমন পর্যায়ে তিনি যদি তার প্রচারকাজ বন্ধ করে দিতেন, আপনার কাছ পর্যন্ত কি ইসলাম ধর্ম এসে পৌছাতো? সমস্ত বাধা অতিক্রম করে তিনি তার কাংখিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেছেন। তার সংগ্রামী জীবন মানুষের সামনে আনে না এখনকার হুজুরেরা।
মহানবী ছিলেন তার সময়কার সবচেয়ে সাম্যবাদী একজন মানুষ। মানুষের সমতার অধিকারে বিশ্বাসী একজন মানুষ। নারী-শিশুদের অধিকার, এতিমের অধিকার, প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। বর্তমান সময়ে তিনি থাকলে তার অনুসারীদের দেখে তিনি হতাশ হতেন। এইরকম পলায়নপর, ভীতু, কলহপ্রিয়, কর্মবিমুখ, সত্যবিমুখ, অন্ধ-অনুকরনপ্রিয় অনুসারী তিনি আশা করতেন না।
No comments:
Post a Comment