9 February 2018

আজটেক প্রবেশিকা ৯ঃ পঞ্জিকা ও জোতির্বিদ্যা

পঞ্জিকা জোতির্বিদ্যা
আজটেকরা জোতির্বিদ্যায় অগ্রসর জাতি ছিলো। তাদের নিজস্ব পঞ্জিকাও ছিলো। আজটেকদের পঞ্জিকা এবং জোতির্বিদ্যা ধর্ম এবং ধর্মীয় জীবনের সাথে জড়িত ছিলো। আজটেকদের কৃষি, উৎসব, দৈনন্দিন জীবন নির্ভর করতো পঞ্জিকার উপর। আজটেকরা পঞ্জিকা পাথরে খোদাই করে রাখতো। 

. পঞ্জিকা
আজটেক পঞ্জিকায় ১৮ মাসে এক বছর। প্রতি মাসে ২০ দিন। প্রতি মাসে ৪ সপ্তাহ এবং প্রতি সপ্তাহে ৫ দিন। বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে বাকী ৫ দিন নেমোন্তেমি (অশুভ দিন)। এই পাঁচ দিন আজটেকরা কিছু না করার চেষ্টা করতো। প্রতি মাসেই আজটেকদের কোনো না কোনো উৎসব থাকতো। আজটেকদের ১৮ মাস হচ্ছে- ১। আত্‌লচাহুয়ালো (১৪ ফেব্রুয়ারি - ৫ মার্চ), ২। ত্‌লাকাহিপেহুয়ালিযত্‌লি (৬ মার্চ - ২৫ মার্চ), ৩। তোযোযতোন্তলি (২৬ মার্চ - ১৪ এপ্রিল), ৪। হুয়ে-তোযোযতোন্তলি (১৫ এপ্রিল – ৪ মে), ৫। তোহকাত্‌ল (৫ মে – ২৪ মে), ৬। এতজালকুয়ালিযত্‌লি (২৫ মে – ১৩ জুন), ৭। তেকুইলহুইতোন্তলি (১৪ জুন – ৩ জুলাই), ৮। হুয়ে-তেকুইলহুইত্‌ল (৪ জুলাই – ২৩ জুলাই), ৯। ত্‌লাহোশিমাকো (২৪ জুলাই – ১২ আগস্ট), ১০। হোকোত্‌ল-হুয়েতযি (১৩ আগস্ট – ১ সেপ্টেম্বর), ১১। ওশপানিযত্‌লি (২ সেপ্টেম্বর – ২১ সেপ্টেম্বর), ১২। তেওত্‌লেকো (২২ সেপ্টেম্বর – ১১ অক্টোবর), ১৩। তেপেইলহুইত্‌ল (১২ অক্টোবর – ৩১ অক্টোবর), ১৪। কুয়েশোল্লি (১ নভেম্বর – ২০ নভেম্বর), ১৫। পানকুয়েতযালিযত্‌লি (২১ নভেম্বর – ১০ ডিসেম্বর), ১৬। আতেমোযত্‌লি (১১ ডিসেম্বর – ৩০ ডিসেম্বর), ১৭। তিতিত্‌ল (৩১ ডিসেম্বর – ১৯ জানুয়ারি) এবং ১৮। ইযকাল্লি (২০ জানুয়ারি – ৮ ফেব্রুয়ারি)বাদবাকী ৯ - ১৩ ফেব্রুয়ারি নেমোন্তেমি। চার বছর পরপর পাঁচ দিনের জায়গায় ছয় দিন নেমোন্তেমি পালন করা হতো।
 
পাথরে খোদাইকৃত আজটেক পঞ্জিকা
. জোতির্বিদ্যা
আজটেকরা জোতির্বিদ্যা কাজে লাগাতো তাদের কৃষির ক্ষেত্রে। আজটেক জোতির্বিদ-পুরোহিতরা সূর্য-চন্দ্র-নক্ষত্রের নিখুঁত হিসাব রাখতেন। আগের প্রজন্মের গ্রহ-নক্ষত্রের হিসাব তারা পরবর্তী প্রজন্মকে দেখিয়ে দিয়ে যেতেন। আজটেকরা সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণকে বিপর্যয় হিসাবে দেখতো। তাদের বিশ্বাস ছিলো এটা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আলামত। আজটেক জোতির্বিদরা ঠিক কখন সূর্যগ্রহন বা চন্দ্রগ্রহন হবে তা বের করতে পারতেন। গ্রহণের সময় আজটেকরা এক জায়গায় সমবেত হয়ে ক্রন্দন করতেন এবং নিজেদের হাত-পায়ে দাগ কাটতেন। গ্রহণের সময় সবচেয়ে সাবধানে রাখা হতো প্রসূতি মায়েদের। আজটেকদের বিশ্বাস ছিলো গ্রহণ তাদের গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে ফেলবে। 

No comments:

Post a Comment