4 April 2020

দৈনন্দিন আলাপ ৩০

১. 
গার্মেন্টস যদি খুলবেই, গণপরিবহন বন্ধ রাখার মানে কি? এতোগুলো লোক হেঁটে কর্মস্থলে আসবে। এদের কেউ কেউ হয়তো এখনো সুস্থ আছেন। তারা যেন কেউ সুস্থ অবস্থায় না থাকে সেজন্যই এই ব্যবস্থা। সব গার্মেন্টস শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া থামছেনা।
দুইবেলা ভাত খাওয়ার জন্য যদি পুরো পরিবার নিয়ে মরতে বসা লাগে, তাহলে এমন রাষ্ট্র দিয়ে আমরা কি করবো? জাতি হিসেবে আমরা এতো নির্লজ্জ যে আমাদের কাউকে কাউকে দেখলে মনে হয় আমাদের জন্মই হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের জ্বি হুজুরি করার জন্য।
আসুন আমরা তথ্য-উপাত্ত দেই জিডিপির, মধ্যম আয়ের দেশে কতো আগেই আমরা পৌছে গেছি তার, আমাদের মন্ত্রীরা দিনরাত নিরলস কাজ করে দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন সমৃদ্ধির দোরগোড়ায়! আমাদের এই গণতন্ত্রবাদী সরকার আমাদের এতো দিয়েছে যে, উন্নয়নের সাগরে ভাসতে ভাসতে আমরা ক্যাঁৎ হয়ে পরে আছি বিছানায়।
গার্মেন্টস খোলার সিদ্ধান্ত কার? সিদ্ধান্তটা আসলে কার হওয়া উচিত? তাকে কেন পল্টন ময়দানে দাড় করিয়ে থাবরানো হবেনা? এতোগুলো মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করার অধিকার কে দিয়েছে? ১০জনের দুই বেলা খাবারের বন্দোবস্ত করতে গিয়ে, এর গুদাম থেকে চাল বেরোয়, ওর গুদাম থেকে সাপ বেরোয়, আর আপনি দেশ নিয়ে চিন্তা করে রাতে ঘুমান না!
আপনার মন্ত্রীপরিষদের মতো এরকম অশিক্ষিত*দা মন্ত্রীপরিষদ আর একটা দেশেও আছে কিনা সন্দেহ! আপনার সাংসদদের মতো এরকম সার্কাস সাংসদ আর একটা দেশেও আছে কিনা, এটাও সন্দেহ! এই আপনার মহামারীকালীন প্রস্তুতি! দেশকে ঢেলতে ঠেলতে খাদের একদম কিনারায় দাড় করিয়ে আপনি উন্নয়নের গল্প শোনান? 

২. 
দুর্যোগ এখনো আসেই নাই। আপনারা যারা মনে করতেছেন এইরকম ৩-৫ কেজি চাইল, ১ কেজি পেঁয়াজ, আধা কেজি তেল; ত্রানে দিয়ে দান করে; দুর্যোগ মোকাবিলা করবেন তাদের জন্য সমবেদনা। আজকে দেখলেন গার্মেন্টস শ্রমিকেরা রাস্তায় হেঁটে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। মৃত্যুর মিছিল তো শুরুই হয় নাই। ধৈর্য ধরে ১ মাস অপেক্ষা করেন, রাস্তায় রাস্তায় লাশ দেখতে পাবেন।
আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা বাংলাদেশে জন্মেছি। আমাদের আরো দুর্ভাগ্য যে আমাদের সরকারে বসে আছেন হাসিনার মতো একটা অথর্ব, কাণ্ডজ্ঞানহীন অথচ স্বৈরাচারী সরকার। এটা এমন এক স্বৈরাচারী সরকার যে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তও নিতে পারেনা। দুর্বল লোকেদের উপর অত্যাচার আর উন্নয়নের গালগল্প ছাড়া এই সরকারের আর তেমন কোনো অর্জন নাই।
মাত্র দুইটা ভুল সিদ্ধান্ত দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে, কে জানে!
১. লকডাউনের সময়কে ছুটি বলে একটা ফাইজলামি করা, প্রায় ৪০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাজে আনা।
২. মসজিদ বা অন্যান্য উপাসনালয় পুরোপুরি বন্ধ না করা। করোনা উপলক্ষ্যে লোকজনের মসজিদে যাতায়াত আরো বেড়ে গেছে, এর ফল কয়েকদিনের মধ্যেই পাবে বাংলাদেশের ধর্মান্ধ লোকেরা। সরকারের উচিত ছিলো মসজিদ বন্ধ করা, পাশাপাশি দেওবন্দী ঘরানার ওয়াজপার্টি বেয়াদব হুজুরদের গ্রেফতার করা। এরা না জানে ধর্ম, না জানে বিজ্ঞান, না আছে ন্যুনতম কমনসেন্স, না আছে শিক্ষাদীক্ষা! আছে কেবল গলা। এইসব মূর্খদের গলাবাজির ফল পাবে বাংলাদেশের ধর্মান্ধ লোকজন।

রাষ্ট্র নামক পুরো সিস্টেম কলাপ্স করবে। মারামারি, হানাহানি বাড়বে; আওয়ামী লীগের লোক যাদের হাতে কিছু প্রশাসনিক ক্ষমতা আছে তারা সেটা ব্যবহার করবে। চুরি করবে, মজুত করবে। দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রন করা এই সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। এই সরকারের মাথামোটা মন্ত্রীপরিষদ এইসব ননসেন্স কথাবার্তা বলতেই থাকবে, মারা না যাওয়া পর্যন্ত বা ক্ষমতা থেকে না সরা পর্যন্ত।
আবারো বলতেছি, দুর্যোগ এখনো আসে নাই। যাদের পক্ষে ঘরে থাকা সম্ভব তারা থাকেন। যাদের কাজ আছে, তারা তা গুছান। বড় ধাক্কার প্রস্তুতি নেন। প্রতিবেশীর খোজ নেন, আত্মীয়দের খোজখবর নেন। এইসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছাড়া মানুষের আর কোনো কাজ থাকতে পারে না।
যার যতটুক প্রয়োজন ততটুকুই মজুত করেন, ততটুকুই খরচ করেন। অন্তত আগামী ১ বছর এরকম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়েই যাবে। সমস্যা হবে, সেটা কেটেও যাবে। নতুন দিন দেখার জন্য কয়জন থাকে তা দেখা যাক! আর সিস্টেম কলাপ্স করার পর নতুন কোন সিস্টেমে দেশ যাবে সেটার জন্যেও অপেক্ষায় থাকলাম।

৩.
অশিক্ষাই আসলে আল্লাহর গজব। এইটা ধর্মের ঠিকাদারদের কে বোঝাবে? আল্লাহর গজব মুসলমান-হিন্দু, ধনী-দরিদ্র, পুরুষ-মহিলা বোঝেনা।

No comments:

Post a Comment